রুম
মেটের গানের সুরে ঘুম ভাঙে সুবলের। কখোন ঘুমিয়ে পড়েছিলো খেয়াল নেই। বন্ধু তার খাটে
বসতে বসতে জিজ্ঞেস করে-
-
ঘুমাইলি
সুবল?
-
নাহ্।
ঘুমিয়ে পড়েছিলো সে কথা গোপন করে সুবল। না হলে এমন মধ্য দুপুরে ঘুমনোর কথা বললে আবার
ডাক্তার ডাকতে যেতে পারে। বিনয় ওর বন্ধুর চেয়ে ভাই বেশি।
-
আরতী
দেবীর ভাষণ কেমন লাগলো ? বলেও মাইরি।
-
ভালো।
- শুধু
ভালো। আমার মনে হলো এই কথা আরম্ভ করেছে। অমনি কথা শেষ। পরে ঘড়ি দেখে বুঝি যে, পাক্কা
পঁতাল্লিশ মিনিট বক্তব্য দিয়েছেন উনি। এতো সুন্দর করে ঘুছিয়ে কথা বলতে শুনিনি কারো
কাছে।
-
হ্যাঁ।
তবে, ভাষণ দেওয়া আর সেই ভাষণ মতে চলা, জীবন যাপন করা কঠিন।
-
তুই
কি বুঝাতে চাইছিস্! আরতী দেবী যেই ভাষণ দিলেন, সেই মতো তিনি চলেন না ?
-
সে
কথা আবার বললাম কোথায় ?
- তোর
কথার মানে তো তা-ই দাঁড়ায়। তোর এই খুঁতখুঁতে স্বভাব আজও গেলো না। মানুষকে বিশ্বাস করতে
শেখ্।
- মানুষকে
বিশ্বাস করেই তো এতোদূর এসেছি। মানুষের জন্য কিছু করতে পারা জীবনের ব্রত নিয়ে লেখাপড়া
করছি। বাবার শত নির্দেশ উপেক্ষা করে সামাজিক বিজ্ঞান নিয়ে লেখাপড়া করেছে। অরও কতো কী
ভাবতে যাচ্ছিলো। বিনয়ের কথায় সম্বিত ফিরে পায়-
-
কিরে,
চুপ হয়ে গেলি যে !
-
কী
বলবো বল।
-
মহিলার
মধ্যে একটা প্রচণ্ড সম্মোহনী শক্তি আছে বলতে হবে। তা না হলে, বিশ্ববিদ্যালয়ের অনুষ্ঠান
এমন শান্তভাবে শেষ হতে দেখি নি আগে। ওনা এক ভাষণে সবাই যেনো ভালো হয়ে গেলো !
-
সেটা
আবার কেমন ?
- দ্যাখ্,
আশীষ এমন কোনো অনুষ্ঠান নেই যে সেখানে শীস বাজায় না। অনুষ্ঠান ভালো হোক মন্দ হোক, শীস
সে বাজাবেই। আজ আশীষের শীস বাজানো শুনেছিস ?
-
না,
তা শুনিনি।
-
তবে
?
- তবে
আর কী। আমিতো বলিনি উনি ভাষণ খারাপ দিয়েছেন। বলেছি- কোনো কথা বলা আর সেই কথা অনুযায়ী
চলা এক কথা নয়।
- সেটা
বুঝতে হলে তো ওনার সাথে থাকতে হবে। শোন্, সুনীল আরতী দেবী সম্পর্কে জানে। তোর খাওজানি
থাকলে শুনে দেখতে পারিস।
-
তাই
নাকি ?
-
হ্যাঁ।
আচ্ছা, বিকালে তোর কোনো প্রোগ্রাম আছে ?
-
কেনো
?
-
জাতীয়
যাদুঘরে উচ্চাঙ্গ সংগীতের অনুষ্ঠান আছে। যাবি ?
-
অবশ্যই
যাবো। তুই জানিস্ না আমি উচ্চাঙ্গ সঙ্গীতের ভক্ত !
- জানি
বলেই তো বললাম। সাড়ে চারটায় রেডি থাকিস্। আমি এখন একটু সোয়ারি ঘাটে যাবো। মাসীর মেয়ে
জামাই বাড়ি। তার খোঁজ না নিয়ে দেশে ফিরলে মা খুব বকাবকি করবে। এ কথা বলে বিনয় রুম থেকে
বের হয়ে গেলো।
সুবল
টেবিলে থাকা গ্লাসের পানি ঢক্ঢক্ করে সাবাড় করে দিয়ে, চাদর মুড়ি দিয়ে আবার শুয়ে পড়লো।
-
চলবে-
সাগর
আল হেলাল
৮.৪.২২
No comments:
Post a Comment