চাচা একজন সফল মানুষ। লেখাপড়া করায় সারাজীবন বাবা-মার কাছ থেকে বেশি সুবিধা ভোগ করেছেন। ডিসি অফিসে চাকরী করায় উপড়ি কামাইও করেছেন বেশ। এরই মধ্যে বড়ো ভাই মারা যাওয়ায় শাপেবর। বাবা থাকতেই কর্তা বনে যান। বড়ো ভাইয়ের সন্তানেরা কে কোথায় কেমন আছে সে খবর না রাখলেও, কোরান মতে ভাইয়ের সম্পত্তি ভোগ-দখল করার অধিকার পেয়ে যান।
বড়ো ভাইয়ের ছেলে-মেয়েরা এখন বুড়ো হতে চলেছে। মানুষ শিশু থেকে বুড়ো হয়, কোরানের আয়াত তো আর বুড়ো হয় না। জমি জমা চাচাজান এখনো ভোগ দখল করে যাচ্ছেন। তার একটাই কথা, ভাতিজারা সম্পত্তি বিক্রি করে খাবে। যদিও চাচা মিঞা নিজেই জমি বিক্রি করেছেন।
চাচা মিয়া ভাতিজার টিনের ঘরের গা ঘেঁসে গাছ লাগান। মেহগনির গাছ। চারা গাছতো আর চিরকাল চারা থাকে না। ধীরে ধীরে বড়ো হয়। চাচা গাছটাকে দ্যাখে, শরীরে হাত বুলায় আর মুচকী মুচকী হাসে। ভাতিজা চাচার হাসির মানে বুঝে না। বোকার মতো চাচার হাসি মুখের দিকে তাকিয়ে নিজেও হাসে।
বাপ-দাদার কোনো সম্পত্তির ভাগ না পাওয়ায় ভাতিজারা এমনিতেও খারাপ আর্থিক অবস্থায় দিনাতিপাত করে। টিনের ঘরে খেয়ে না খেয়ে কোনোক্রমে জীবন অতিক্রম করছে।
মেহগনি গাছ এখন বেশ বড়ো। এতোটা বড়ো যে, একটা পাতা খসে পড়লে যেই শব্দ হয়- তাও বেশ জোরে সোরে শুনতে পাওয়া যায়। চাচার মেহগনির গাছে কয়েক শত ফল ধরে। এখন বসন্তকাল। মেহগনির ফল খসে পড়ার সময়।
হঠাৎ একটা মেহগনির ফল ধপাস্ করে পড়ে ভাতিজার ঘরের টিনের চালে। ভাতিজা চমকে ওঠে। চাচার মুখে সে দিনের সেই হাসির মানে বুঝতে পারে। চাচার হাসির সাথে নিজের হাসার কথা পড়ায় নিজের গালে চড় মারতে ইচ্ছে করে। তবে বুঝতে পারে- তার চাচা সত্যিই একজন সফল মানুষ।
-
সাগর আল হেলাল
১২.০৩.২০২২
No comments:
Post a Comment